
বৈষম্য আর হিংসার পৃথিবীতে শৈশব থেকেই বেড়ে উঠেছি অতি মানবের মধ্যে। চারপাশের মানুষ রূপি মানুষ গুলো আমাকে মানুষ ভাবতে পারেনি কখনো ।
মানুষ হতে হলে চলমান সমাজে যে গুণ বা বৈশিষ্ট্য থাকতে হয় তার কেনটায় ছিলনা আমার।
যেমন স্বাস্থ্য, সৌন্দর্য, গায়ের সাদা বর্ণ, অনেক অর্থ-বিত্ত আর সাথে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা। এর কোনটাই না থাকায় তাদের কাছে আমি অমানুষ বা ভিন্ন কোনো প্রাণী হিসেবে গণ্য।
হিংসা বিদ্বেষ নিন্দা তিরস্কার টিপ্পনী এগুলো ছাড়া আমার সমাজ আমাকে ভালো কিছু শিখায়নি। কি শিক্ষিত বা অশিক্ষিত, সমাজপতি, আত্মীয় স্বজন সবাই ছিল একই রোগে আক্রান্ত।
দারুণ রোগাক্রান্ত সমাজ আর চরম হিংস্র আততায়ীর সাথেই লড়াই করে টিকে থাকতে হয়েছে।
পরিবার থেকে শুরু করে কথিত জ্ঞানী, ছাত্র শিক্ষক, হজুর মজুর সবাই ছিলো কুসংস্কারে ভরপুর। এর বাইরে যাওয়ার সাধ্য নেই কারো।
বৈরীতার মধ্যে যখন আমার নিজস্ব চিন্তা এবং চেতনা বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে চাইলাম তখনই বিপত্তি। সেই বিপত্তি উপেক্ষা করে আমাকে বেড়িয়ে আসতে পাহাড় সমো তিমির পেড়িয়ে আসতে হয়েছে।
আজো আমি চরম বেখাপ খাওয়া মানুষ, এজন্য কারো দৃষ্টিতে আমি অহংকারী, কারো কাছে নির্বোধ, তাদের সুবোধের কাছে আমি এক নিকৃষ্টতম প্রাণী মাত্র।
ছুচো ইঁদুরের মতো না পারি দল বেধে হাটতে, না পাড়ি সিংহের মতো হিংশ্র হতে। তবে আমার শান্ত মায়া হরিনের মতো নির্জন পথে হাটতে ভালো লাগে। কিন্তু এই শান্ত হরিন হতে গিয়ে সহজ শিকারে পরিনত হয়েছি প্রতি পদে পদে।
আমি খারাপ হওয়ার কিছু কারন হলো, আমি সবার মতো হাটতে পারিনা, আমি ওদের মতো চুলের সীঁথি কাটিনা, আমি তাদের মতো বোতাম আওলা জামা পরিনা, বয়স অনুযায়ী রং বদলাইনা, ধারালো ছুড়ি পছন্দ না করে কাশফুলের দোলানী পছন্দ করি, মানুষ পিটিয়ে উল্লাস না করে কাকের ডাক শুনতে ভালোবাসি ইত্যাদি।
আমি কখনো প্রেমিক পুরুষও হতে পারিনি, কারন নারীর আকৃষ্ট করার মতো কোনো পুঁজি আমার কাছে ছিলনা, আজো নেই, জীবনে একবার একটি মেয়েকে কথা দিয়েছিলাম “আমি তোমাকে বিয়ে করব” আমি সেই কথা আর বদলাতে পারিনি। হয়তো এজন্যই আর আমার প্রেমিক হয়ে ওঠা হয়নি।
-চলবে।