
রংপুরের গঙ্গাচড়ায় নদী দূষণ রোধে উদ্বুদ্ধকরণ ও সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক প্রশিক্ষণ কর্মসূচী অনুষ্ঠিত
সানজিম হোসেন-নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর
বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ| সুজলা-সুফলা, শস্য-শ্যামলা দেশ হিসেবে বাংলাদেশের যে খ্যাতি তার মূলে রয়েছে নদ-নদী ,নদী বিধৌত প্রভৃতির সমন্বয়ে গড়ে উঠেছে এ জনপদের যোগাযোগও বাণিজ্যনির্ভর সভ্যতা ও সংস্কৃতি ,ভৌগোলিক ও সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ইতিহাস ও ঐতিহ্য ইত্যাদি কর্মকাণ্ড অনেকাংশেই নদী নির্ভর|
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় “জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন” কর্তৃক প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে অবৈধ এবং অন্যান্য ২৪৮ টি নদীর তথ্যভান্ডার তৈরি ও গবেষণা গবেষণার মাধ্যমে অবৈধ দখল ও দূষণ এর তথ্য উপস্থাপিত হবে হাইড্রলজিক্যাল এবং থিমেটিক মানচিত্র তৈরি হবে|সকল নদনদীর প্রকল্পের মাধ্যমে নদীর নাব্যতা গতিপথ মাছ ও জলজ প্রাণীর আবাসস্থল চিহ্নিত হবে| সর্বস্তরের জনগণের মধ্যে নদী দূষণ ও অবৈধ দখলের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা বৃদ্ধি পাবে এবং স্থানীয়ভাবে গঠিত কমিটির মাধ্যমে নদী ও জলাশয় ও স্থানীয় জনগণের অংশগ্রহণ ও সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে|
তিস্তা নদী রক্ষার্থে তিস্তা পাড়ের মানুষ জনের সাথে আয়োজিত সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মোহাম্মদ মনির হোসেন চৌধুরী (এনভায়রনমেন্ট এন্ড ক্লাইমেট বেঞ্জ স্পেশালিস্ট, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন) তিনি তার বক্তব্যে বলেন নদী পাড়ের মানুষই নদী রক্ষার হাতিয়ার তারা সচেতন হলেই নদীরক্ষা সম্ভব নদী দূষণ রোধ করা সম্ভব প্রতিবছরের বর্ষার প্লাবনে পলি মাটিতে কৃষি আবাদি জমির ব্যাপক উপকারী ভূমিকা পালন করে এমনকি কৃষি জমির উর্বরতা বৃদ্ধি করে|
নদী পাড়ের মানুষের জীবনমান উন্নয়ন করার জন্য তিস্তা নদীর গুরুত্ব অপরিসীম তিনি তার বক্তব্যে বলেন নদীর মাছের স্বাদ ও পুকুরের মাছের মধ্যে অনেক তাৎপর্যপূর্ণ ব্যবধান যার জন্য প্রয়োজনীয় জলাশয় দূষণ মুক্ত করা প্রয়োজন|
আজকের প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এ আর এম খালেকুজ্জামান, (প্রোগ্রাম অফিসার জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন), তিনি বলেন তিস্তা নদীর গতিপথ রক্ষা করার জন্য তার সমস্ত শাখা ও উপশাখা গুলোর মুখ খুলে দিতে হবে তিস্তার পানি প্রবাহের রাস্তা তৈরি করে দিতে হবে তাহলে প্রধানতম তিস্তার পানি যাওয়ার চাপ কমবে নদী ভাঙ্গন একটু হলেও রক্ষা পাবে|
প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন গংগাচড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব এরশাদ উদ্দিন পিএএ তিস্তা নদীর বাঁধ ভাঙ্গন রক্ষায় তিস্তার অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ করতে হবে অন্যদিকে প্রশস্ত না করে গভীর করতে হবে তাহলে অন্যায় থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব| অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে তার গৃহীত পদক্ষেপের মধ্যে কোন সুপারিশ খাটবে না কোনোভাবেই কম্প্রোমাইজ করবেন না এ ব্যাপারে কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি| ইতিমধ্যেই তিনি মহিপুরের তিস্তায় বালু উত্তোলন বন্ধ করে তাদের জেল এবং জরিমানা করে মাহিন্দ্রা ট্রাক বাজেয়াপ্ত করেছেন তিনি বলেন নদীর বালু ব্যবসায়ীদের দুই বছরের জেল এবং অর্থ দন্ড দেয়া হবে যার মধ্যে কোন সুপারিশ চলবে না ধরা পড়লেই জেল-জরিমানা থাকবেই নদীর ক্ষতিকর প্রভাবে প্রভাবিত করে নদীর অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ করতে কঠোর নির্দেশনা জারি করা হয়েছে|নদী দখল স্থাপনা তৈরি সর্বত্র আমরাই দায়ী প্রকৃতি তার প্রতিশোধ নিবে অবশ্যই যখন প্রতিশোধ নিবে তখন আমাদের ব্যাপক ক্ষতিসাধন হয়ে যাবে। তাই সময় থাকতে আমাদের সকলকে সচেতন হতে হবে নদীকে বাঁচাতে হবে নিজেকে বাঁচতে হবে।
নোহালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জনাব আশরাফ আলীর সভাপতিত্বে আয়োজিত নদী দূষণ রোধে উদ্বুদ্ধকরণ ও সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট নোহালি ইউনিয়ন পরিষদের চর এলাকায় মিনার বাজার সংলগ্ন তিস্তা ভাঙ্গন রোধ করতে অনুরোধ জানান এবং ঘাঘট নদীর পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থাপূর্বক হেক্টর হেক্টর আবাদি জমি উদ্ধারের সহযোগিতা কামনা| প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে অন্যান্যদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন নোহালী ইউনিয়ন পরিষদের ওয়ার্ড সদস্যবৃন্দ এবং তিস্তা নদী পাড়ের রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ থেকে শুরু করে সর্বস্তরের জনগণ|